শেখ মামুনুর রশীদ মামুন:
ময়মনসিংহ নগরীতে একটি প্রতারক চক্রকে ধরতে চৌকস টিমের নেতৃত্ব দিয়েছেন কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম খান। এই চক্রটি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মৃত ব্যক্তিদের মোবাইল সীম রেজিস্ট্রেশন এবং ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত ১০ টা ৫০ মিনিটে গোহাইলকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—হাফিজুল ইসলাম প্রিন্স, আজিজুল হক ও তানভীর রহমান কাব্য। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মোবাইল সীম তৈরি করার সরঞ্জাম, ফিঙ্গার হিটার, মেশিন, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার এবং তিন শতাধিক নকল সীম।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম খান জানান, গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, কতিপয় ব্যক্তিরা গোহাইলকান্দি এলাকায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৃত ব্যক্তিদের আঙুলের ছাপ দিয়ে মোবাইল সীম রেজিস্ট্রেশন করে অন্যত্র বিক্রি করে প্রতারণা করছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে পুলিশ একটি শক্তিশালী টিম গঠন করে অভিযান চালায়। অভিযানে প্রিন্সকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, পরে আজিজুল হক ও তানভীর রহমান কাব্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে তিনটি ল্যাপটপ, সাতটি মোবাইল, তিনটি ফিঙ্গার হিটার মেশিন, আটটি বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার স্ক্যানার, ৩০০টি গ্রামীন সীম, ৩০টি ফিঙ্গার প্রিন্ট যুক্ত নেগেটিভ এবং বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডি নম্বরসহ সাদা কাগজে প্রিন্ট করা ১৫ পাতার তালিকা। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে একটি মোবাইল ট্যাব।
এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং-৮৬, তারিখ-২১/০৩/২০২৫, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ (সংশোধনী/২০১০) এর ৩৫(২)/৫৫(৭)/৭৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সাজেদ কামাল জানান, প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্ত করার জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ অভিযান সফল হওয়ায় ময়মনসিংহ পুলিশ প্রশাসন এরকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।