মুখ থেকে ওরা রুটি কেড়ে নেয়,
বলতে দেয় না কথা,
অথচ আমারই রক্ত ও ঘামে
গড়া- এই সভ্যতা। ‘
মনে পড়ে, – ১৩৯ বছর আগের কথা, যখন শ্রমজীবী মানুষ ২৪ ঘন্টার ২২ ঘন্টাই শ্রম দিতো, শোষণের শিকার হতো। বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল -শোষক ও শোষিত।ফিলাডেলফিয়ার জুতা কারখানার ধর্মঘটী শ্রমিকদের মালিকেরা ২২ঘন্টা পর্যন্ত খাটাতেন। তারা বিদ্রোহ করলেন। এই অমানুষিক শোষণের বিরুদ্ধে তারা ধর্মঘট করলেন। বেরিয়ে এলো শাসকশ্রেণীর চেহারা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলিতে স্ফিংস – ফিশারসহ এক ঝাঁক তরুণ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। সারা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়। মেহনতী মানুষের লাল ঝান্ডা, শ্রমিক ঐক্যের ‘পহেলা মে’- রক্ত লাল মে দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়।
৮ ঘন্টা কাজ, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম, ৮ ঘন্টা বিনোদন- সর্বত্র উচ্চারিত এ দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়। শ্রম লুণ্ঠন বন্ধের জন্য যে মে দিবস, তা আজও অর্জিত হয়নি।
গ্রাম অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ আজও উদয়াস্ত খাটে। সপ্তাহ, মাস কিংবা বছর শেষে পায়না ন্যায্য মজুরি। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে পিঠ চুলকিয়ে পুসকুড়ি গালা নেতাদের কাছে প্রশ্ন -ওই হাড় জিরজিরে কঙ্কালসার মানুষগুলো আর কবে তাদের ন্যায্য পাওনা পাবে ? আপোষহীন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে–
‘তোমরা শুয়ে রবে তে’তলার পরে,
আমরা রহিব নিচে,
অথচ তোমাদের দেবতা বলিব,
সে ভরসা আজ মিছে। ‘
জয় হোক বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের।শ্রমজীবী মানুষের বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক!