সেনবাগে বিএনপি নেতার মামলায় ১ নম্বর আসামি হয়েও কোতোয়ালী থানার ভার পেলেন মিজানুর রহমান, সুশীল সমাজ ক্ষুব্ধ, প্রশাসন নিরব
শেখ মামুনুর রশীদ মামুনঃ
একটি রাজনৈতিক সহিংসতার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হয়েও ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে, উঠেছে প্রশ্ন প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট ও হুমকির অভিযোগে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট সেনবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন বিএনপি নেতা নুরনবী বাচ্চু (মামলা নং ৯২/২০২৪)। দণ্ডবিধির একাধিক গুরুতর ধারায় করা এ মামলায় তৎকালীন ওসি মিজানুর রহমানকে করা হয় ১ নম্বর আসামি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রউফ জানান, “এই মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান এখনো জামিন নেননি।” মামলার অভিযোগ পত্রে রয়েছে অপহরণ, অবৈধ আটক, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ।
এরপরও গত ১৯ মে পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অথচ দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি ছুটিতে চলে গেছেন বলে নিশ্চিত করেন থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম।
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও ওসি মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার সরকারি নম্বরে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকেও একাধিকবার ফোন করে পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনাকে ঘিরে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ওসি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ। অনেকে বলছেন, “একজন এজাহারভুক্ত আসামি কীভাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হতে পারেন? প্রশাসনের কি আর নিরপেক্ষ অফিসার নেই?”
সুশীল সমাজের মতে, এমন পদায়ন জনগণের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে গভীর সংশয় তৈরি করে।
বিরোধীদল এবং মানবাধিকার সংগঠন গুলো বলছে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিচারাধীন একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে রাখা দুঃখজনক ও নীতিবিরুদ্ধ।
সরকারি পদে এমন বিতর্কিত নিয়োগ প্রশাসনিক জবাবদিহি এবং ন্যায়বিচারের ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মনে করছেন অনেকে।