শেখ মামুনুর রশীদ মামুনঃ
ময়মনসিংহ জেলার খাদ্য গুদাম গুলোতে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে। মিলারদের কাছ থেকে টনপ্রতি ৪০০–৫০০ টাকা ঘুষ নিয়ে গুদামে ঢুকানো হয়েছে নিম্নমানের চাল! অল্প সময়ে কোটিপতি বনে গেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। স্থানীয় মিলার ও কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, এই ঘুষ এখন ওপেন সিক্রেট বিষয়—একে বলা হয় “অফিসিয়াল খরচ”! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘুষের এই রেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় থেকে নির্ধারণ করা হয় আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে। উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বলা হচ্ছে—“তোমরা শুধু নিয়ম মেনে চলো, দোষ গেলো ওপরে।” অভিযোগ উঠেছে, ভালো মানের চালও ঘুষ ছাড়া গুদামে ঢুকতে পারে না। মিলাররা বলেন— “ঘুষ না দিলে আমাদের ভালো চালও মন্দ বলে ফেরত দেয়। আবার ঘুষ দিলে মন্দ টাকেও ভালো বলে গ্রহণ করে। আমরা প্রতিবাদ করলে ব্যবসা ও লাইসেন্স ঝুঁকির মুখে পড়ে।” সম্প্রতি বোরো মৌসুমে এই ঘুষ বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিভিন্ন গুদামে নিম্নমানের চাল জমা পড়েছে, অথচ সরকারি তদারকি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন—
“জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চাল সংগ্রহের এই প্রকল্পে যদি ঘুষ–দুর্নীতি চলে, তবে সাধারণ মানুষের জন্য সরকার কিসের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে? “যে কর্মকর্তারা কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কে? চুনোপুঁটি নয়—কেন বড় সিন্ডিকেটকে ধরা হচ্ছে না? বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে নিম্নমানের চাল গুদামে জমা পড়লে খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তাদের অধিকার দুটোই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারি চাল সংগ্রহের নামে এ ধরনের ঘুষ বাণিজ্য শুধু সরকারি কোষাগারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, একই সঙ্গে জনবিশ্বাসকেও ধ্বংস করছে। এখন প্রশ্ন উঠছে— “সরকার কবে এই দুর্নীতি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে? “অথবা জনগণকে আরও কতদিন ভোগান্তি পোহাতে হবে?”