মোঃ শরিফুল ইসলাম, দাউদকান্দি:
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান গনি ও তার সহযোগীদের ভয়ে নয়াকান্দি-দুঃখিয়ারকান্দি গ্রামের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পরও তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ভোল পাল্টে বিএনপি নাম ভাঙানোর অভিযোগ
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ পতনের পর ওসমান গনি স্থানীয় নয়াকান্দি বাজারে তার ব্যক্তিগত অফিসে বিএনপি নেতাদের ছবি টানিয়ে ছোট ভাই সাদ্দামকে নিয়ে পুনরায় প্রভাব বিস্তার শুরু করেন।
মাদক-চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজত্ব
২০২২ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নয়াকান্দি, দুঃখিয়ারকান্দি, ভাটিবন্দ, সোনাকান্দা, নারান্দিয়া, তাইরাকান্দি, বাঘাইরামপুর, গোপালপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে আধিপত্য বিস্তার করে আসছেন ওসমান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদক ব্যবসা, জুয়া, চাঁদাবাজি ও বিচার-বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
ইউএনও অফিসে হাতাহাতি, সমঝোতায় ছাড়া
গত ১৭ জুন তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়েই ওসমান গনি ও ছবির মেম্বারের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে তাকে থানায় নেওয়া হলেও বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাদেক হোসেনের হস্তক্ষেপে তিনি ছাড়া পান বলে অভিযোগ।
সচেতনতা সভায় হামলা ও নারী নির্যাতন
১১ আগস্ট দুঃখিয়ারকান্দি ঈদগাহ মাঠে মাদক-সন্ত্রাস বিরোধী সভায় স্থানীয়রা তাকে সন্ত্রাসী চক্রের হোতা হিসেবে অভিযুক্ত করলে ওসমান ক্ষিপ্ত হয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে গ্রামে হামলা চালান। ভুক্তভোগী রুজিনা আক্তার জানান, তার ভাইয়ের উদ্যোগে সভার পরদিন সকালে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়িতে ঢুকে তাকে ও ছোট বোনকে মারধর করা হয়। একইভাবে লাকী আক্তার জানান, ছেলের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং তিনি সন্তান নিয়ে ঢাকায় চলে যেতে বাধ্য হন।
মামলার পাহাড়
তিতাস থানা সূত্রে জানা গেছে, মাদক, চুরি-ছিনতাই, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ওসমানের বিরুদ্ধে ৭টি এবং তার ভাই সাদ্দামের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ওসমান গনি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”